বীর্যপাতের পর যৌন বিষয়ে অনীহা হবার কারণ কি ??

আপনার প্রশ্নটা মোটেও বোকা বোকা নয়।
ইনফ্যাক্ট আপনার এই প্রশ্নের উত্তর
খুঁজতে অনেকেই গবেষণা করছেন।
বীর্যপাতের পর যৌন বিষয়ে অনীহা একটি
স্বাভাবিক ব্যাপার। একবার বীর্যপাতের পর
কিছুক্ষণের জন্য ছেলেদের আর যৌন
উত্তেজনা, অর্গ্যাজম ও বীর্যপাত সম্ভব নয়।
পৃথিবীর প্রায় প্রত্যক পুরুষের ক্ষেত্রেই
এমনটা হয়। পরপর দুবার বীর্যপাতের মাঝের
ন্যুনতম প্রয়োজনীয় এই সময়কালকে বলা
হয় Refractory period। তবে একেকজনের
ক্ষেত্রে ওই refractory period
একেকেরকম হয়। ব্যক্তিবিশেষের উপর
নির্ভর করে এই সময়কাল ১০ সেকেন্ড
থেকে শুরু করে ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত হতে
পারে। সাধারণত কম বয়সে refractory period
কম হয়, কিন্তু বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এই
সময়ের মান বাড়তে থাকে। তাই আপনি নিশ্চিন্ত
থাকুন। আপনার কোন সমস্যা নেই। Refractory
period -এর সময় যে কেবল মনে যৌন
উত্তেজনা আসেনা তাই নয়, ওই সময় পুরুষাঙ্গ
স্পর্শের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে
যায় এবং সামান্য স্পর্শেই ব্যাথা করতে পারে।
বীর্যপাতের পর যৌন বিষয়ে অনীহা হবার
কারণ
এবারে বলছি বীর্যপাতের পর যৌন বিষয়ে
অনীহা (রিফ্র্যাকটরি পিরিওড) কেন হয় সে
সম্মন্ধে। দুর্ভাগ্যবশত এই ঘটনার কারণ
এখনো সঠিকভাবে জানা নেই। তবে
গবেষকেরা কয়েকটি কারণ প্রস্তাব
করেছেন। প্রথম কারণটি হল অর্গ্যাজম এবং
বীর্যপাতের সময় শরীরে অক্সিটোসিন
এবং প্রোল্যাকটিন হরমোন ক্ষরিত হয়। এই
দুটি হরমোনের প্রভাবে একবার
বীর্যপাতের পর সঙ্গে সঙ্গেই আবার যৌন
উত্তেজনা সম্ভব নয়। বিশেষত প্রোল্যাকটিন
হরমোন ডোপামাইন নামের একটি
নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকারীতা কমিয়ে
দেয়। এই ডোপামাইন মনে যৌন উত্তেজনা
সৃষ্টির জন্য জরুরী। তাই একবার বীর্যপাতের
পর মন থেকে কামনা অন্তত কিছুক্ষণের
জন্য বিদায় নেয়। যত বেশি অক্সিটোসিন এবং
প্রোল্যাকটিন ক্ষরিত হবে তত বেশি সময় এই
refractory period থাকবে। দ্বিতীয় আরেকটি
কারণও প্রস্তাবিত করা হয়েছে। সেই
মতানুসারে বীর্যপাতের পর সেমিনাল
ভেসিকলের দেওয়ালে তরলের চাপ কমে
যায়। এখানে উল্লেখ্য যে এই সেমিন্যাল
ভেসিকলেই বীর্যের মোট আয়তনের
প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষরিত হয় এবং জমা হয়। স্বভাবতই
একবার বীর্যপাতের পর এই ভেসিকলে
(থলিতে) সঞ্চিত তরলের পরিমাণ অনেক
কমে যায়। ফলস্বরূপ ওই অঙ্গ থেকে যে
স্নায়বিক সিগন্যাল তৈরি হয় তাতে কিছু পরিবর্তন
আসে যার প্রভাবে মন থেকে কামনা চলে
যায়। ধীরে ধীরে যখন আবার সেমিনাল
ভেসিকল তরল পূর্ণ হয় এবং তার দেওয়ালে চাপ
বৃদ্ধি পায় তখন মনে কামনার পুনরোত্থান হয়।
এবারে বলছি এই refractory period এর
প্রয়োজনীয়তার কথা। ঘন ঘন বীর্যপাত
হলে বীর্যের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায় এবং
শুক্রাণুর কোয়ালিটিও ভাল হয়না। তাই এই
refractory period, যাতে একবার বীর্যপাতের
পর কিছুক্ষণ আর বীর্যপাত হতে না পারে।
ফলে সুস্থ, সবল ও নিরোগ সন্তান
জন্মানোর সম্ভাবনা বেশি হয়।

Post a Comment

0 Comments